Dr Sarvepalli Radhakrishnan Biography in Bengali সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণানের জীবনী, বাণী ও উক্তি – একজন সফল মানুষ ও নাগরিক গঠনে শিক্ষকের ভূমিকা অগ্রগণ্য। শিক্ষক শুধুমাত্র ছাত্রদের পড়াশোনায় সাহায্য করে না, তথাপি তাদের চরিত্র গঠনে এবং ভবিষ্যতে সঠিক লক্ষ্যে পৌঁছাতে সাহায্য করে।
৫ই সেপ্টেম্বর জাতীয় শিক্ষক দিবস ও ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণাণ (Sarvepalli Radhakrishnan) এর জন্মদিন হিসেবে উদযাপন করা হয়।
আজ আমরা জাতীয় শিক্ষক দিবস (Teachers Day in Bengali) ও ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণাণ সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানব:
ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণাণ এর জীবনী
Dr Sarvepalli Radhakrishnan Biography in Bengali
ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণাণ ছিলেন একজন দার্শনিক, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী এবং লেখক। বিংশ শতাব্দীতে তিনি দর্শন তত্ত্বের একজন মস্ত বড় পন্ডিত ছিলেন।
Sarvepalli Radhakrishnan এর প্রাথমিক জীবন
সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণাণ তৎকালীন মাদ্রাস প্রেসিডেন্সির পুলিয়ানগুড়ি নামক স্থানের একটি তেলুগু ভাষি নিয়োগী ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
- জন্ম – 5th September, 1888
- মৃত্যু – 17th April, 1975
- পিতা – সর্বপল্লী বীরাস্বামী
- মাতা – সর্বপল্লী সীতা ( সীতাম্মা )
আরও পড়ুন:
শিক্ষাজীবন
তাঁর প্রাথমিক জীবন কাটে তিরুুুুত্থানি ও তিরুপতি তে। তাঁর পিতা ছিলেন স্থানীয় জমিদারের খাজাঞ্চি ।
- প্রাথমিক শিক্ষা – K.V. High School, Thiruttani.
- উচ্চপ্রাথমিক শিক্ষা – Hermansberg Evangelical Lutheran Mission School, Tirupati এবং Government Higher Secondary School, Walajapet.
Sarvepalli Radhakrishnan খুব বুদ্ধিমান ছিলেন। তিনি শিক্ষা জীবনে অনেক বৃত্তি লাভ করেছিলেন এবং সেই বৃত্তের সাহায্যেই তিনি তার পড়াশোনা চালিয়ে যান।
আরও পড়ুন:
তাঁর পরিবারের আর্থিক অবস্থা খুব একটা সচ্ছল ছিল না। দূর সম্পর্কের এক দাদার কাছ থেকে দর্শনের বই পান এবং তখনই ঠিক করেন তিনি দর্শন নিয়ে পড়বেন। স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করার জন্য তিনি “বেদান্ত দর্শনের বিমুর্ত পূর্বকল্পনা ” (The Ethics of the Vedanta and its metaphysical Presuppositions) বিষয়ে একটি গবেষণা মূলক প্রবন্ধ লেখেন।
তিনি ভেবেছিলেন তাঁর গবেষণামূলক প্রবন্ধ দর্শনের অধ্যাপক বাতিল করে দেবেন। কিন্তু অধ্যাপক অ্যালফ্রেড জর্জ হগ তার প্রবন্ধ পড়ে খুবই খুশি হন। এই প্রবন্ধ যখন ছাপানো হয় তখন রাধাকৃষ্ণাণ এর বয়স ২০ বছর।
Sarvepalli Radhakrishnan এর বৈবাহিক জীবন ও পরিবার
১৬ বছর বয়সে রাধাকৃষ্ণাণ তাঁর এক দুরসম্পর্কের বোন, শিবকামু র সঙ্গে বৈবাহিক বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের পাঁচটি কন্যা সন্তান এবং একটি পুত্র সন্তান (সর্বপল্লী গোপাল) ছিল। তাঁরা ৫১ বছর বৈবাহিক জীবন যাপন করেন।
Read Also:
কর্মজীবন
১৯০৯ সালে সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণাণ মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সি কলেজের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে নিযুক্ত হন। এরপর তিনি University of Mysore, University of Calcutta, University of Oxford, University of Chicago ও অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনার কাজ করেন। সেই সময় তিনি ছিলেন প্রথম ভারতীয় যিনি University of Oxford এ অধ্যাপনা করেছিলেন। University of Mysore এ অধ্যাপনা কালীন তিনি বেশকিছু পত্রিকা লিখেন – The Quest, Journal of Philosophy এবং International Journal of Ethics.
রাজনৈতিক জীবন
Sarvepalli Radhakrishnan তার সফল কর্মজীবনের পরে রাজনীতি শুরু করেছিলেন। UNESCO তে তিনি স্বাধীন ভারতের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেন। ১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীন হওয়ার পর তিনি ছিলেন স্বাধীন ভারতের প্রথম উপরাষ্ট্রপতি (সময়কাল : ১৯৫২ – ১৯৬২ ) এবং দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি ( সময়কাল : ১৯৬২ – ১০৬৭)।
আরও পড়ুন:
শিক্ষক দিবস কবে ও কেন পালন করা হয় ?
তিনি যখন রাষ্ট্রপতি ছিলেন তখন তার কিছু ছাত্র এবং বন্ধু ৫ই সেপ্টেম্বর তাঁর জন্মদিন পালন করার জন্য তাঁকে অনুরোধ করেন। তিনি এর উত্তরে বলেছিলেন, “৫ই সেপ্টেম্বর আমার জন্ম দিবস পালন না করে শিক্ষক দিবস হিসাবে পালন করলে আমি আরও অধিক সম্মানিত বোধ করব।”
সেই থেকে শুরু হয় শিক্ষক দিবস পালন করা যা এখনো সকল ভারতবাসী তাকে সম্মান জানানোর জন্য পালন করে থাকে।
পুরস্কার এবং সম্মান
- ১৯৩১: নাইট উপাধিতে ভূষিত হন
- ১৯৩৩-৩৭: পাঁচবার সাহিত্য বিভাগে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনীত হন
- ১৯৩৮: ব্রিটিশ একাডেমীর ফেলো হিসেবে মনোনীত হন
- ১৯৫৪: ভারত রত্ন
- ১৯৫৪: জার্মানির কলা ও বিজ্ঞান বিভাগের সাম্মানিক পুরস্কার
- ১৯৬১: German Book Trade প্রদত্ত শান্তি পুরস্কার
- ১৯৬২: রাধাকৃষ্ণান কে সম্মান জানানোর জন্য ভারতবাসী ১৯৬২ সাল থেকে শিক্ষক দিবস পালন করা শুরু করে।
- ১৯৬৩: ব্রিটেনের Order of Merit
- ১৯৬৮: সাহিত্য একাডেমী পুরস্কার
- ১৯৭৫: মৃত্যুর কিছুদিন আগে Templeton Prize
সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণানের বাণী ও উক্তি (10 Famous Sarvepalli Radhakrishnan Quotes in Bengali):
- ৫ ই সেপ্টেম্বর আমার জন্মদিন করার পরিবর্তে শিক্ষক দিবস পালন করলে আমি অধিক সম্মানিত বোধ করব।
- ধর্ম হল একটি আচরণ, কোনো বিশ্বাস নয়।
- জ্ঞান ও বিজ্ঞান হল একমাত্র পথ যার জীবন আনন্দ ও খুশি তে ভরে উঠবে।
- ঈশ্বর হল সমস্ত আত্মার আত্মা – সর্বোচ্চ চেতনা।
- যখন আমরা ভাবি, আমরা জানতে পারি, আমাদের শিক্ষা সম্পূর্ণ করি।
- শিক্ষার সর্বোচ্চ ফল হওয়া উচিত একজন সৃজনশীল মানুষ, যিনি বিপরীত পরিস্থিতি এবং প্রাকৃতিক প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে পারবেন।
- বই হল একমাত্র পন্থা যার মাধ্যমে বিভিন্ন সভ্যতা ও সংস্কৃতির মেইল ঘটানো সম্ভব।
- ঈশ্বর আমাদের সকলের মধ্যে বাঁচে, অনুভব করে ও কষ্ট ভোগ করে এবং সময়ের সাথে তিনি আমাদের মধ্যে গুণ, জ্ঞান, সৌন্দর্য ও ভালোবাসা ছড়িয়ে দেন।
- আপনার প্রতিবেশীকে ভালোবাসেন, কারণ আপনি নিজেই আপনার প্রতিবেশী। আপনার প্রতিবেশী অন্য কেউ এটা একটা ভ্রম।
- মানুষ হচ্ছে যৌক্তিকতা সত্তা – দুনিয়ার গৌরব ও কলঙ্ক।
শিক্ষক দিবস ও সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণন সম্পর্কে ১০টি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
৫ই সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবস পালন করা হয়।
সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণন ১৮৮৮ সালের ৫ই সেপ্টেম্বর জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁকে সম্মান জানানোর জন্য প্রতি বছর ৫ই সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবস হিসাবে পালন করা হয়।
রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন কিছু ছাত্ৰ ৫ই সেপ্টেম্বর তাঁর জন্মদিন পালন করার অনুরোধ করলে তিনি বলেন – ৫ই সেপ্টেম্বর আমার জন্মদিন পালন না করে শিক্ষক দিবস পালন করলে আমি বেশি খুশি হব।
এর পর থেকে প্রতি বছর ৫ই সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবস হিসেবে পালন করা শুরু হয়।
৫ই সেপ্টেম্বরে
১৯৬২ সাল থেকে ভারতবর্ষে শিক্ষক দিবস পালন করা শুরু হয়।
T – Talented অর্থাৎ প্রতিভাশালী,
E – Excellent অর্থাৎ শ্রেষ্ঠ গুণসম্পন্ন,
A – Adorable অর্থাৎ শ্রদ্ধেয়,
C – Charming অর্থাৎ মুগ্ধকারী,
H – Humble অর্থাৎ নম্র,
E – Encouraging অর্থাৎ উৎসাহদায়ক,
R – Responsible অর্থাৎ দায়িত্বপূর্ণ।
তিনি হৃদরোগে (Heart failure) আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
তিনি ১৯৭৫ সালের ১৭ই এপ্রিল মারা যান।
তিনি Madras (বর্তমানে Chennai) এর Mylapore এ মারা যান।
সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণন ৮৮ বছর বয়সে মারা যান।
- আরও পড়ুন: সম্পূর্ণ রামায়ণের কাহিনী
শিক্ষক দিবসের তাৎপর্য
শিক্ষক দিবসের বক্তৃতা (২০০ শব্দে)
মাননীয় শিক্ষকগণ ও আমার প্রিয় বন্ধুদেরকে সুপ্রভাত জানাই। আমরা সকলেই জানি আজ আমরা সকলে শিক্ষক দিবস উদযাপন করার জন্য উপস্থিত হয়েছি। আমার নাম অমিত মন্ডল ( আপনার নাম দিবেন ), আমি আজকের এই বিশেষ মুহূর্তে একটি বক্তৃতা দেব।কিন্তু সর্বপ্রথম আমি আমার শিক্ষক মহাশয় কে ধন্যবাদ জানাতে চাই যিনি আমাকে এই সুযোগ করে দিয়েছেন।
শিক্ষক আমাদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। শিক্ষক ছাড়া যোগ্য সমাজ ও উজ্জ্বল জীবন কল্পনাতীত। প্রতি বছর ৫ই সেপটেম্বর আমরা শিক্ষক দিবস পালন করি এবং আজকের দিনেই ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণাণ জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি একজন শিক্ষক ছিলেন।
১৯৬২ সালে ছাত্রদের অনুরোধে তিনি ভারতের রাষ্ট্রপতি হন। তিনি ছিলেন একজন বিদ্বান ব্যক্তি ও উপদেষ্টা। ভারতবর্ষের সকল বিদ্যার্থী তাকে সম্মান জানানোর জন্য আজকের দিনে শিক্ষক দিবস পালন করে থাকে।
শিক্ষকরা হলেন যুব সমাজের মূল স্তম্ভ। ছাত্রদের চরিত্র গঠনে তাদের ভূমিকা অপরিসীম। আরও বলা হয় শিক্ষকরা মাতা-পিতার থেকেও বড় কারণ মাতা-পিতা শুধু আমাদের জন্ম দেয় কিন্তু শিক্ষক-ছাত্রদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গঠন করে।
সুতরাং আমাদের উচিত সব সময় তাদের যোগ্য সম্মান ও ভালোবাসা দেওয়া। তারা ক্রমাগত প্রচেষ্টার মাধ্যমে আমাদের শিক্ষিত করে তোলেন। তাদের অনুপ্রেরণা জন্যই আমরা জীবনে সফলতা অর্জন করতে পারি।
প্রিয় ছাত্র বৃন্দ আমাদের উচিত সবসময় তাদের উপদেশ মেনে চলা এবং ভারতবর্ষের যোগ্য নাগরিক হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করা।
ধন্যবাদ।
Sarvepalli Radhakrishnan Original Speech
Teachers Day Special: Original Voice of Dr. Sarvepalli Radhakrishnan
আশা করি সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণানের জীবনী ও শিক্ষক দিবস (Teachers Day in Bengali) সম্পর্কে এই লেখাটি পড়ে আপনার ভালো লেগেছে।
“Sarvepalli Radhakrishnan Biography in Bengali” লেখা সম্পর্কে আপনার কোনো মূল্যবান মতামত থাকলে তা আপনি আমাদের Commentকরে জানাতে পারেন।
আপনি এই লেখাগুলো পড়তে পারেন:
- বিখ্যাত মানুষের জীবনী ও উক্তি
- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১২০ টি বিখ্যাত উক্তি
- নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু কি সত্যিই বিমান দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছিলেন?
- ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের সম্পূর্ণ জীবন কাহিন
আর আমাদের লেখা Sarvepalli Radhakrishnan Biography in Bengali ভালো লাগলে অবশ্যই সবার সাথে শেয়ার করুন ।
Apnar lekha khuboi bhalo legechhe. Kintu ekta bisoye sandeha jagchhe je, ebar sikkhak dibose amotrito hoye bibhinno boktar bhasone suni 31tomo oneke 34tomo sikkhok dibos bole thaken. Kunti thik? Amar mote jonmogoto onusare 134 tomo hoi.kunti thik janaben to?
Very very good.
Thanks for reading this article
Nice and thanks
YOU ARE WELCOME
তাঁর স্ত্রী শিবুকামী ৫১বছর বয়সে যদি মারা যান তাহলে তারা কি করে ৫১বছরের বৈবাহিক জীবন পালন করলেন? অঙ্কে মেলে না।
এছাড়া অল্পের ওপর এটি একটি সুন্দর প্রতিবেদন। লেখককে অশেষ ধন্যবাদ।
স্বপন কুমার ঘোষ।
সভাপতি, পরিচালন সমিতি
সালকিয়া হিন্দু স্কুল(হাই ও ইঊনিট-২)
স্বপন বাবু আপনি ঠিক বলেছেন। আমার ই ভুল। আমি লেখার সময় বিষয় টি খেয়াল করিনি। আমি বিষয়টি ঠিক করে দিয়েছি।
আপনার সুচিন্তিত মতামত ও প্রতিক্রিয়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
Very nice .
ধন্যবাদ আমার লেখা পড়ার জন্য।
khub sundor hoyece..apnake salute janai
স্বাগতম।
আমার লেখা আপনার ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম।
Good your speech.thank you
YOU ARE WELCOME