জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জীবনী রচনা Kazi Nazrul Islam biography in Bengali
একাধিক ভাগ্যবান কবির ন্যায় কাজী নজরুল ইসলাম সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মগ্রহণ করেননি।
অবর্ণনীয় দুঃখ, কষ্ট, লাঞ্ছনা, বঞ্চনা, অপমান এবং অত্যন্ত দারিদ্রতার মধ্য দিয়ে কবির বাল্য, কৈশোর এবং যৌবনকাল কেটেছে। পারিবারিক সীমাহীন এই দুঃখ দুর্দশার মধ্যেও তিনি আজীবন বাংলা কাব্য ও সাহিত্য চর্চায় ব্রতি ছিলেন।
কাজী নজরুল ইসলাম ছিলেন বিস্ময়কর প্রতিভার অধিকারী। তিনি বাংলা কাব্য ও সাহিত্যের প্রচন্ড বিপ্লব ঘটিয়েছিলেন। দেশে স্বাধীনতা ও মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠার জন্য অত্যাচারী শাসক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে তিনি কলমকে অস্ত্র হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন।
তার কবিতা, গান, নাদ, গজল, গল্প এবং উপন্যাস প্রতিটি বাঙালির মনকে করে তুলেছিল জাগরিত।
তিনি ছিলেন একাধারে শ্রমিক, সৈনিক, কবি, সাহিত্যিক ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী এবং একজন খাঁটি দেশ প্রেমিক।
কাজী নজরুল ইসলামের জীবনী Kazi Nazrul Islam biography in Bengali
জন্ম | বাংলা ১৩০৬ সালের ১৪ই জ্যৈষ্ঠ (24th May, 1899) |
জন্ম স্থান | পশ্চিম বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রাম, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত |
বাবার নাম | কাজী ফকির আহমেদ |
মায়ের নাম | জাহিদা বেগম |
ডাকনাম | দুখুমিয়া |
দাম্পত্য সঙ্গী | আশালতা সেনগুপ্ত (প্রমিলা) নার্গিস আসার খানম |
সন্তান | কৃষ্ণ মুহাম্মদ, অরিন্দম খালেদ (বুলবুল), কাজী সব্যসাচী এবং কাজী অনিরুদ্ধ |
কর্মক্ষেত্র | কবি, ঔপন্যাসিক, গীতিকার, সুরকার, নাট্যকার, সম্পাদক |
উল্লেখযোগ্য কর্ম | চল্ চল্ চল্, বিদ্রোহী, নজরুলগীতি, অগ্নিবীণা, বাঁধন হারা, ধূমকেতু, বিষের বাঁশি, গজল |
আন্দোলন | বাংলার নবজাগরণ |
মৃত্যু | বাংলা ১৩৮৩ সালের ১২ই ভাদ্র (29th August, 1976) |
মৃত্যুস্থান | ঢাকা, বাংলাদেশ |
ওয়েবসাইট | nazrul-rachanabali.nltr.org |
কাজী নজরুল ইসলামের জীবনী Kazi Nazrul Islam biography in Bengali
জন্ম
পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার চুরুলিয়া গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে বাংলা ১৩০৬ সালের ১৪ই জ্যৈষ্ঠ মাসে (ইংরেজি ১৮৯৯ সালের ২৫ শে মে) তিনি জন্ম গ্রহণ করেন।
বাল্যকালে কাজী নজরুল ইসলামের ডাকনাম ছিল দুখুমিয়া।
পিতা ও মাতার নাম
নজরুল ইসলামের পিতার নাম কাজী ফকির আহমেদ এবং মাতার নাম জাহিদা বেগম।
চুরুলিয়ায় কাজী বংশ এককালে খুবই সম্ভ্রান্ত পরিবার ছিল। কিন্তু যে সময় কাজী নজরুল ইসলাম শিশু হয়ে আবির্ভূত হন সেই সময় ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির নানা রকম বঞ্চনা ও শোষণের শিকার হয়ে দৈন দশার একেবারে চূড়ান্ত পর্যায়ে এসে পৌঁছেছিল তাঁরা।
স্ত্রী ও সন্তান
Kazi Najrul Islam এর প্রথম বিয়ে হয় নার্গিস আসার খানমের সাথে। কিন্তু তিনি ঘর জামাই থাকতে অস্বীকার করেন।
পরে প্রমীলা দেবীর সাথে তার বিয়ে হয়েছিল।
নুজরুলের চার সন্তান ছিল এবং তাদের নাম হল কৃষ্ণ মুহাম্মদ, অরিন্দম খালেদ (বুলবুল), কাজী সব্যসাচী এবং কাজী অনিরুদ্ধ।
আরও পড়ুন: স্বামী বিবেকানন্দের জীবনী
প্রাথমিক জীবন ও শিক্ষা
কাজী হচ্ছে তাদের বংশের উপাধি। পিতা ছিলেন স্থানীয় মসজিদের ইমাম ও মাজারের মতোয়াল্লি। ফলে ছোটবেলা থেকেই কাজী নজরুল ইসলাম ইসলামিক চিন্তা ও ভাবধারা নিয়ে বড় হয়ে ওঠেন।
বাল্যকালে তিনি নিকটস্থ মক্তবে শিক্ষাজীবন শুরু করেন। তিনি বাংলা ও আরবি ভাষার পাশাপাশি স্থানীয় শিক্ষা কেন্দ্রে ফরাসি ভাষা শিখতে থাকেন।
১৯০৮ সালে যখন নজরুল ইসলামের বাবা মারা যান তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র নয় বছর। সংসারে নেমে আসে অভাব, অনটন ও দুঃখ দুর্দশা। লেখাপড়া প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। ফলস্বরূপ জীবিকা অর্জনের জন্য মাত্র দশ বছর বয়সে তাঁকে কাজে নামতে হয়।
সেই সময় মক্তব থেকে নিম্ন মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর তিনি সেখানেই শিক্ষকতা করা শুরু করেন।
এরপর তিনি লেটো দলে যোগ দেন এবং খুব কম সময়ের মধ্যেই সুখ্যাতি অর্জন করেন।
লেটো গানের দলে কোন অশ্লীল গান পরিবেশন হতো না বরং বিভিন্ন পালা গান, জারি গান, মুর্শিদী গান ইত্যাদি পরিবেশিত হত।
অসাধারণ প্রতিভার বলে তিনি লেটো দলের প্রধান নির্বাচিত হন।
লেটো গানের দলে থেকেই তিনি বিভিন্ন বই পত্র পড়ে সাহিত্যচর্চায় চালিয়ে যান।
এ সময় তিনি কয়েকটি কবিতা, ছড়া গান ও পালাগান রচনা করে অসম্মান্য দক্ষতার পরিচয় দেন।
এরপর তিনি শিক্ষালাপের জন্য গ্রামের কয়েকজন ব্যক্তির সহযোগিতায় রানীগঞ্জ শেয়ারশোল রাজ স্কুলে ভর্তি হন।
শৈশবকাল থেকে তিনি ছিলেন একটু চঞ্চল প্রকৃতির। স্কুলের বাধা ধরা নিয়ম কানুন তিনি একদমই সহ্য করতে পারতেন না। তাই তিনি হঠাৎ একদিন স্কুল থেকে উধাও হন।
কিন্তু কোথায় যাবেন, কি খাবেন, কি করে চলবেন ইত্যাদি চিন্তা করে এবং আর্থিক অভাব অনটনের কারণে তিনি আসানসলের এক রুটির দোকানে মাত্র পাঁচ টাকার মাসিক বেতনে চাকরি নেন।
রুটি তৈরির ফাঁকে ফাঁকে তিনি বিভিন্ন কবিতা, গান, গজল ইত্যাদি রচনা করেন এবং বিভিন্ন বই পত্র পড়ে তাঁর ঞ্জান ভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করতে থাকেন।
তার প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে এক পুলিশ ইন্সপেক্টর তাকে সঙ্গে করে নিয়ে আসেন এবং ময়মনসিংহ জেলার ডালিরামপুর হাইস্কুলে ভর্তি করে দেন।
এরপর তিনি পুনরায় রানীগঞ্জের শেয়ারশোল রাজ স্কুলে ভর্তি হন।
আরও পড়ুন:
সেনা বাহিনীতে যোগদান
১৯১৯ সালের বিশ্ব যুদ্ধের সময় তিনি নবম শ্রেণী ছাত্র। যুদ্ধের কারণে তার প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়া আর হলো না।
তিনি সেনাবাহিনীতে যোগ দেন এবং ৪৯ নম্বর বাঙালি পল্টন রেজিমেন্টের হাবিলদার পদে প্রমোশন লাভ করেন। সৈনিক জীবনে তাকে চলে যেতে হয় পাকিস্তানের করাচিতে।
কিন্তু তার কবিতা ও সাহিত্যচর্চা থেমে যায়নি। করাচীর সেনা নিবাসে একজন পাঞ্জাবি মৌলবি সাহেবের সাথে তার পরিচয় হয়।
এরপর থেকেই তিনি কবিতা, গল্প, উপন্যাস, গজল এবং সাহিত্য ইত্যাদির ব্যাপক রচনার তাগিদ অনুভব করেন।
কবি কাজী নজরুল ইসলাম প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা লাভের তেমন কোনো সুযোগ না পেলেও অপ্রাতিষ্ঠানিকভাবে তিনি তার কাব্য ও সাহিত্যচর্চা চালিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: একাকিত্ব নিয়ে ১৪০ টি উক্তি
কাব্য চর্চা
যুদ্ধ থেমে গেলে ১৯১৯ সালের এপ্রিল মাসে পলটন রেজিমেন্ট ভেঙে দেয়ার পর তিনি ফিরে আসেন নিজ মাতৃভূমি চুরুলিয়া গ্রামে।
এরপর শুরু হয় তার একনিষ্ঠ কাব্য চর্চা। তার লেখা একাধারে দৈনিক বসুমতি, মুসলিম ভারত, মাসিক প্রবাসী, বিজলী, ধুমকেতু প্রভৃতি বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় ছাপা হতে থাকে।
কাজী নজরুল ইসলামের লেখা কবিতা তদানীন্তন রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছিল। ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রামের নিপীড়িত, নির্যাতিত, শোষিত ও বঞ্চিত মানুষের জাগরণে তিনি ছিলেন মহান প্রবক্তা।
১৯২১ সালে মাত্র 22 বছর বয়সে তিনি রচনা করেন তার বিখ্যাত অমর কবিতা “বিদ্রোহী” যা বাংলার সাহিত্যে তাকে “বিদ্রোহী কবি” হিসেবে অমর করে রেখেছে।
কবিতা লাইনগুলো ছিল এরকম
বল বীর-
বল উন্নত মম শির!
শির নেহারি আমারি,
নত-শির ওই শিখর হিমাদ্রীর!বল বীর –
বল মহাবিশ্বের মহাকাশ ফাড়ি’
চন্দ্র সূর্য্য গ্রহ তারা ছাড়ি’
ভূলোক দ্যুলোক গোলক ভেদিয়া,
খোদার আসন ‘আরশ’ ছেদিয়া
উঠিয়াছি চির-বিস্ময় আমি বিশ্ব-বিধাত্রীর!
মম ললাটে রুদ্র-ভগবান জ্বলে রাজ-রাজটীকা দীপ্ত জয়শ্রীর!……….
বিদ্রোহী , কাজী নজরুল ইসলাম
কবি কাজী নজরুল ইসলাম বহু গজল, আধুনিক গান, গল্প, কবিতা, সাহিত্য ও উপন্যাস রচনা করে যান। এ সকল বিষয়ে তার রচনার সংখ্যা কয়েক সহস্র। তার রচনাবলীর মধ্যে অগ্নিবীণা, বিষের বাঁশি, দোলনচাঁপা, চক্রান্ত, প্রলয় শিখা, ভাঙ্গার গান, নতুন চাঁদ, ফনিমনসা, মৃত্যুক্ষুধা, সাম্যবাদী, সর্বহারা, রাজবন্দী, জবানবন্দি প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।
বাংলাদেশের নজরুল ইনস্টিটিউট নামে একটি প্রতিষ্ঠান তাঁর লেখার উপর গবেষণা চালাচ্ছে। তিনি ফরাসি ভাষার মহাকবি হাফিজের কতগুলো কবিতা বাংলায় অনুবাদ করেছেন।
কবি কাজী নজরুল ইসলামের অধিকাংশ কবিতা ও সাহিত্য রুশ ভাষাতেও অনূদিত হয়েছে। ইংরেজি ভাষাতেও তাঁর লেখা অনুবাদ হয়েছে এবং এখনো হচ্ছে।
আরও পড়ুন: স্বামী বিবেকানন্দের জীবনী
নজরুল সঙ্গীত
কাজী নজরুল ইসলাম এর লেখা গান নজরুল সঙ্গীত নামে পরিচিত। তিনি চার হাজারের অধিক গান লিখে যান। বেশির ভাগ গানে তিনি নিজেই সুর দিয়ে যান। তার লেখা কিছু বিখ্যাত গান হল ‘ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ’, ‘চল চল চল’, ‘ত্রিভুবনের প্রিয় মুহাম্মদ’ ইত্যাদি।
বাংলার নবজাগরণ
দেশ প্রেমিক কাজী নজরুল ইসলাম ব্রিটিশ শাসকগোষ্ঠীর শোষণ ও জুলুমের বিরুদ্ধে তার কলমকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা শুরু করেন।
ইতিমধ্যে সমগ্র দেশে শুরু হয়েছে ব্রিটিশ বিরোধী তুমুল আন্দোলন। কাজী নজরুল ইসলাম সাপ্তাহিক ‘ধুমকেত’ পত্রিকায় লিখতে লাগলেন। ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে তিনি আরো সোচ্চার হয়ে ওঠেন। অন্যায়, অবিচার, অসাম্য ও অসত্যের বিরুদ্ধে লিখনের মাধ্যমে শুরু করেন তিনি প্রচন্ড বিদ্রোহ।
তিনি বাঙালি জাতিকে তাদের অতীতের ঐতিহ্যের কথা স্মরণ করিয়ে শুনিয়েছিলেন জাগরণের বাণী। তিনি স্বদেশবাসীকে আহ্বান জানিয়েছেন পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে দেয়ার জন্য।
১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দে লর্ড কর্নওয়ালিসের প্রবর্তিত চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের মাধ্যমে ব্রিটিশ শাসকগোষ্ঠী এদেশের বিশেষ করে কৃষকদের ক্রমান্বয়ে নিঃস্ব করে ফেলেছিল। কৃষকরা তাদের জমি ও বাড়িঘর সবকিছু হারিয়ে প্রায় পথে বসেছিল। কবি কাজী নজরুল ইসলাম ব্রিটিশ ঔপনিবেশক শাসক চক্রের বিরুদ্ধে এ দেশের কৃষক সমাজকে বিদ্রোহ করার আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: আব্দুল কালামের ৫১ টি অনুপ্রেরণামূলক বাণী
পুরস্কার ও সম্মাননা
১৯৪৫ সালের কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কবি ‘জগত্তারিনী’ পুরস্কারপ্রাপ্ত হন।
১৯৬০ সালে তিনি ভারত সরকার কর্তৃক ‘পদ্মভূষণ’ উপাধিতে ভূষিত হন।
১৯৭০ সালের বিশ্বভারতী কবিকে ‘ডিলিট’ উপাধিতে ভূষিত করেন।
১৯৭৩ সালে কবি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘ডিলিট’ উপাধি লাভ করেন।
১৯৭৫ সালে কবি কে ‘একুশে পদক’ প্রদান করা হয়।
বাংলাদেশ সরকার কবিকে ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রদান করে।
কাজী নজরুল ইসলামকে বাংলাদেশ সরকার জাতীয় কবির মর্যাদা দিয়েছে।
অসুস্থতা
১৯৪২ সালে কবি কাজী নজরুল ইসলাম এক দূরারগ্য ব্যধিতে ব্যধিতে আক্রান্ত হন এবং বাকশক্তি চিরদিনের জন্য হারিয়ে ফেলেন।
তাঁকে সুস্থ করে তোলার জন্য দেশের সকল প্রকার চিকিৎসা ব্যর্থ হবার পর ১৯৫৩ সালে সুচিকিৎসার জন্য তাকে সরকারি ব্যবস্থা মাধ্যমে লন্ডনে পাঠানো হয়।
কিন্তু সেখানেও কবিকে রোগ মুক্ত করা সম্ভব হয়নি।
আরও পড়ুন: ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জীবনী
বাংলাদেশে আগমন
তারপর ১৯৭২ সালে তাকে বিদেশ থেকে স্বাধীন বাংলাদেশে রাজধানী ঢাকায় নিয়ে আসা হয় এবং ঢাকার পিজি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
মৃত্যু
দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর বাংলার ১৩৮৩ সালের ১২ই ভাদ্র (29th August, 1976) এই বিখ্যাত মনীষী পিজি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।
তিনি তার একটি সঙ্গীতে উল্লেখ করে যান যে তাকে মসজিদের পাশে কবর দেয়ার জন্য যেন তিনি কবরে শুয়েও মুয়াজ্জিমের সুমধুর আযানের ধ্বনি শুনতে পান।
তিনি লিখেছিলেন
“মসজিদেরই পাশে আমার কবর দিও ভাই।
যেন গোরে থেকেও মোয়াজ্জিনের আজান শুনতে পাই।।আমার গোরের পাশ দিয়ে ভাই নামাজীরা যাবে,
পবিত্র সেই পায়ের ধ্বনি এ বান্দা শুনতে পাবে।
গোর-আজাব থেকে এ গুনাহগার পাইবে রেহাই।।”
কবির ইচ্ছা অনুযায়ী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিত সংলগ্ন উত্তর পাশে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় কবিকে সমাহিত করা হয়।
প্রতিদিন প্রায় অসংখ্য মানুষ কবির মাজার জিয়ারত করছেন। আজ কবি পৃথিবীতে নেই। কিন্তু বাংলা কাব্যে কবির অবদান তাঁকে আজও অমর করে রেখেছে প্রতিটি বাঙালি হৃদয়ে।
উপসংহার
আধুনিক বাংলা কাব্য ও সাহিত্যে সাধনার সবচেয়ে বড় প্রেরণা হলেন কবি কাজী নজরুল ইসলাম। তার আবির্ভাবে স্বতন্ত্র কাব্য সাধনার দিগন্তে নবীনতম সূর্যের মহিমা বিচ্ছুরিত হয়েছে।ইসলামিক বিভিন্ন বিষয়গুলোকে তিনিই প্রথমবার সাহিত্যে রূপ দিয়েছিলেন।
বাংলা ভাষায় আরবি ও ফারসি শব্দের সমর্থক ব্যবহার, ইসলামী আদর্শ এবং মুসলিম ঐতিহ্যের রূপায়ণের নজরুল ইসলামের অবদান অবিস্মরণীয়। তার প্রতিটি গান, গজল প্রায় প্রত্যেক বাঙালির মুখে আজও উচ্চারিত হচ্ছে।
আরও পড়ুন:
Kazi Nazrul Islam FAQ
কাজী নজরুল ইসলাম 1899 সালের 25th May (বাংলা ১৩০৬ সালের ১৪ই জ্যৈষ্ঠ মাস) জন্মগ্রহণ করেন।
কাজী ফকির আহমেদ
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
১৯০৮ সালে কাজী নজরুল ইসলামের বাবা মারা যান। তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র নয় বছর।
জাহিদা বেগম
১৯২২ সালের ৬ই জানুয়ারি
কাজী নজরুল ইসলাম “ধূমকেতু” ছদ্মনামে লিখতেন।
কাজী নজরুল ইসলামের দুটি বিয়ে হয়েছিল এবং তাদের নাম হল আশালতা সেনগুপ্ত (প্রমিলা দেবী) ও নার্গিস আসার খানম।
কাজী নজরুল ইসলাম ৭৭ বছর বয়সে মারা যান।
কাজী নজরুল ইসলাম এর প্রথম স্ত্রীর নাম হল নার্গিস আসার খানম।
কাজী নজরুল ইসলামের বাল্য নাম দুখু মিয়া।
প্রথম রচনা ও গল্প – বাউন্ডুলের আত্মকাহিনী (১৯১৯)
প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থ ও গল্পগ্রন্থ – ব্যাথার দান (১৯২২)
প্রথম কাব্যগ্রন্থ – অগ্নিবীণা
কাজী নজরুল ইসলামকে ১৯৭২ সালের ২৪ মে জাতীয় কবির মর্যাদা দেওয়া হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় পাবলিক লাইব্রেরির কাছে।
বুলবুল (১৯২৮)
29th August, 1976 (বাংলা ১৩৮৩ সালের ১২ই ভাদ্র)
বন্ধুরা আজকের প্রতিবেদন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জীবনী রচনা (Kazi Nazrul Islam biography in Bengali) ছিল এ পর্যন্তই।
যদি এই প্রতিবেদনটি পড়ে আপনি একটু হলেও নতুন কিছু জেনে থাকেন তবে বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করতে ভুলবেন না।
আর নিচে কমেন্ট করে আমাদের জানান নেক্সট কার জীবনী সম্পর্কে জানতে চান। আপনাকে নতুন কিছু জানানোটাই আমাদের আসল উদ্দেশ্য।
সর্বশেষ একটি কথা বেশি বেশি পড়ুন বেশি বেশি জানুন ও নিজের জীবনকে সুন্দর করুন।
আরও পড়ুন:
Khubsundor
Jasim uddin biography please.