শ্রীমদ্ভগবদ গীতা ১৮ অধ্যায়ে বিভক্ত। এই গীতার সারাংশ পাঠ (Srimad Bhagavad Gita in Bengali) নিম্নে সংক্ষেপে বলবার চেষ্টা করছি:
শ্রীমদ্ভাগবত গীতা ১৮ অধ্যায়ের সারাংশ Srimad Bhagavad Gita in Bengali
কুরুবংশে ধৃতরাষ্ট্র ও পাণ্ডু দুই ভাই। ধৃতরাষ্ট্রের একশ পুত্র কৌরব। আর পাণ্ডুর পাঁচ পুত্র পান্ডব।
কৌরবরা খল, হিংসুটে, একগুঁয়ে। অন্যদিকে পান্ডবরা ধার্মিক, বিনয়ী, সদাচারী ও মহাযোদ্ধা।
কৌরবদের জোষ্ঠ দুর্যোধন পান্ডবদের প্রাপ্য রাজ্য দিতে না চাইলে কুরুক্ষেত্রে যুদ্ধের আয়োজন হল।
ধৃতরাষ্ট্র জন্ম থেকেই অন্ধ। হস্তিনায় বসে যুদ্ধের খবর শুনতে চান।
ব্যাসদেবের কৃপায় সঞ্জয় দিব্যদৃষ্টি লাভ করে পাঁচশ মাইল দূরের যুদ্ধক্ষেত্রের সকল কিছু দেখতে ও সকলের কথা শুনতে পেলেন। ঠিক বর্তমান যুগের টেলিভিশনের মত তিনি যুদ্ধক্ষেত্রের সমস্ত ঘটনাবলি বলতে লাগলেন ধৃতরাষ্ট্রকে।
ধৃতরাষ্ট্রের প্রশ্নের উত্তরে সঞ্জয় বলতে শুরু করলেন, “কৌরবদের ১১ অক্ষৌহিণী সেনা ও পান্ডব পক্ষে ৭ অক্ষৌহিণী সেনা কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধক্ষেত্রে দাঁড়িয়ে আছে।”
(১ অক্ষৌহিণী সেনা = ২১৮৭০ টি হাতি, ২১৮৭০ টি রথ, ৬৫৬১০ টি অশ্ব আর ১০৯৩৫ জন পদাতিক সেনা)
কপিধ্বজ রথে বসে আছেন তৃতীয় পান্ডব অর্জুন। তিনি সারথী শ্রীকৃষ্ণকে তাঁর রথ দুই দলের মাঝখানে নিয়ে যেতে বললেন। শ্রীকৃষ্ণ তাই করলেন।
আরও পড়ুন: ভগবদ গীতা কি এবং কেন পড়বেন?
1) বিষাদ যোগ – শ্রীমদ্ভাগবত গীতা সারাংশ
যুদ্ধক্ষেত্রে অর্জুন দেখেন, কৌরব বাহিনী সামনে দাঁড়িয়ে আছে। তার আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, গুরুজন প্রভৃতি এই সেনাবাহিনীতে রয়েছেন। যাদের সাথে তাকে যুদ্ধ করতে হবে। তাদেরকে হত্যা করার কথা ভেবে অর্জুন দুঃখ ও অপরাধবোধে ভুগতে শুরু করেন।
তিনি তার ধনুক নামিয়ে রাখেন। তাঁর সারথি ভগবান শ্রী কৃষ্ণকে জিজ্ঞাসা করেন, “আমি কীভাবে আমার নিজের লোকদের সাথে যুদ্ধ করব?”
এই কথা বলে তিনি অসহায় ভঙ্গিতে রথের উপর বসে পড়েন।
আরও পড়ুন: গৌতম বুদ্ধের সংক্ষিপ্ত জীবনী
2) সাংখ্য যোগ – Bhagavad Gita Saar in Bengali
শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে বলেন, “তুমি বৃথা চিন্তা কর কেন? আত্মা অমর। সে কখনো মরে না। শুধু এই শরীর মরে। এই পৃথিবী এবং এর মানুষ তোমার সৃষ্টি নয়। ওদের প্রেমে নিজেকে জড়াচ্ছো কেন? তাদেরকে হারানোর শোক কেন? তারা সবাই এর পূর্বে বহুবার মারা গেছেন এবং তাদের জন্ম হয়েছে প্রত্যেক বার।”
ধর্মরক্ষার জন্য এই যুদ্ধ তোমাকে করতেই হবে। এটাই হল একজন ক্ষত্রিয়র কর্তব্য।
এই কথা শুনে অর্জুন শ্রী কৃষ্ণকে বলেন যে তার মনে এখনও অনেক সংশয় আছে। এরপর তিনি শ্রীকৃষ্ণকে সবকিছু বিস্তারিত বলার জন্য অনুরোধ করেন।
আরও পড়ুন: শুভ অক্ষয় তৃতীয়া ২০২৩ ছবি ও শুভেচ্ছা বার্তা
3) কর্মযোগ – গীতা পাঠ
শ্রী কৃষ্ণ বলেন, “হে অর্জুন এই পৃথিবীতে প্রত্যেকেরই নিজের কর্তব্য পালন করা উচিত। কিন্তু ফল প্রাপ্তির আশা করা উচিত নয়।”
কোন কিছুর আসক্ত না হয়ে কাজ করতে হবে এবং সেই কর্ম ধর্মানুসারে করা করতে হবে।
সমস্ত কর্ম ঈশ্বরের প্রতি উৎসর্গ করা উচিত।
এমনকি যদি তুমি যুদ্ধ না করো, তবে সেটাও একটি কর্ম হবে। কিন্তু এর ফলে পৃথিবীতে পাপী লোকের সংখ্যা বাড়তে থাকবে। যার ফলে সর্বত্র পাপ ছড়িয়ে পড়বে।
এজন্য তুমি তোমার মোহো ছেড়ে যুদ্ধ শুরু করো। এটাই তোমার কর্তব্য।
আরও পড়ুন: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবনী
4) জ্ঞানযোগ – Srimad Bhagavad Gita in Bengali
এই অধ্যায়ে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ গীতার পৌরাণিক ইতিহাস বর্ণনা করেছেন।
সর্বপ্রথম তিনি সূর্য দেবকে (বিভাসাবন) গীতার জ্ঞান দিয়েছিলেন।
এরপর সূর্য দেব তাঁর শিষ্যদের সেই জ্ঞান দিয়েছিলেন এবং এই জ্ঞান এভাবেই সবত্র ছড়িয়ে পড়তে থাকে।
ভগবান বলেছেন, “যখনই ধর্ম ধ্বংসের পথে অগ্রসর হয়, তখনই তিনি এই পৃথিবীতে অবতারিত হন।”
এই যুদ্ধের রঙ্গমঞ্চ তিনি এমনভাবে সাজিয়েছেন যেন পাপীরা শাস্তি পায়।
কিন্তু যারা তার প্রতি সমর্পিত হন, তিনি তাদের অবশ্যই রক্ষা করেন।
এই যুদ্ধ তিনিই সৃষ্টি করেছেন যাতে পাপীদের শাস্তি হয়।
5) কর্ম সন্ন্যাস যোগ – শ্রীমদ্ভাগবত গীতা সারাংশ
শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন, সন্ন্যাস মানে জাগতিক মোহো মায়া থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ঈশ্বরের উপাসনা করা।
কিন্তু সন্ন্যাস গ্রহণের জন্য সবার অরণ্যে যাওয়ার প্রয়োজন নেয়।
কর্তব্য পালনের সময় বস্তুগত আনন্দে মোহো না থাকলেও ভগবানকে লাভ করা যায়।
6) ধ্যান যোগ – Bhagavad Gita Saar in Bengali
ধ্যানের মাধ্যমে একজন মানুষ তার ইন্দ্রিয়কে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। বাইরের জিনিস থেকে মনোযোগ সরিয়ে শুধুমাত্র ঈশ্বরের ধ্যান করা উচিত।
নিরন্তর অনুশীলনের মাধ্যমে ধ্যানকারী যোগী হয়ে ওঠেন। তিনি প্রকৃত সুখ পেতে শুরু করেন এবং কোন কিছু নিয়ে চিন্তিত বা ভীত হন না। তিনি ভগবানের ভক্ত হয়ে যান।
ধ্যানের শেষ অবস্থা হল সমাধি। এই পর্যায়ে পৌঁছে যোগী ঈশ্বরের সাক্ষাত পান।
Source – Srimad Bhagavad Gita in Bengali
7) বিজ্ঞান যোগ – Vagbat Gita in Bengali
শ্রী কৃষ্ণ বলেছেন যে মহাবিশ্বের সবকিছু তাঁর দ্বারা সৃষ্ট। সব কিছুতেই তিনি উপস্থিত।
সূর্য, পৃথিবী, গ্রহ, নক্ষত্র, জ্ঞান-বিজ্ঞান, ইন্দ্রিয়, সুখ, দুঃখ, পাপ, পুণ্য ইত্যাদি সবই তাঁর তৈরি।
যারা জ্ঞানের দ্বারা এই বিষয়টি বোঝে, তারা ভগবানের ভক্ত হয়ে যান।
যারা সন্দেহ করে তারা জগতের জড় বস্তুর প্রতি নিবেদিত হয়ে পড়ে। আর এটাই হয় তাদের দুঃখের কারণ।
তারা কখনও বৈকুণ্ঠ (মোক্ষ) পায় না এবং মৃত্যু লোকে বারবার জন্ম নিতে হয়, পার্থিব দুঃখ-কষ্ট ভোগ করতে হয়। Bhagavad Gita Summary in Bengali.
8) অক্ষর ব্রহ্মযোগ – Srimad Bhagavad Gita in Bengali
এই অধ্যায়ে শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে ব্রহ্ম ও আত্মা ইত্যাদি সম্পর্কে বলেছেন।
কৃষ্ণ বলে “অহম ব্রহ্মাস্মি” অর্থাৎ “আমি ব্রহ্ম“।
আর যেহেতু মানুষের আত্মাও ভগবানের অংশ, তাই মানুষও ব্রহ্ম।
মানুষ এসব জানতে পারে না, কারণ তাদের বুদ্ধি মোহোর আবরণে আবৃত থাকে।
শ্রীকৃষ্ণ আরও বলেছেন যে অন্যান্য সমস্ত দেব-দেবীও কেবল তাঁর দ্বারাই সৃষ্টি হয়েছিল। তাঁর আরাধনা করা মানেই পরমব্রহ্ম অর্থাৎ শ্রী কৃষ্ণেরও পূজা করা।
যারা কৃষ্ণের ধ্যান করেন এবং মৃত্যুর সময় কৃষ্ণের উপাসনা করেন তিনি তাদের মোক্ষ অর্থাৎ মুক্তি দান করেন।
9) রাজগূহ্য যোগ – Bhagavad Gita Summary in Bengali
এই অধ্যায়ে শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন, পৃথিবীতে সবচেয়ে বড় রহস্য হল – কৃষ্ণই ঈশ্বর। তিনিই মহাবিশ্ব সৃষ্টি করেছেন। প্রতিটি কণাতে তিনি বিরাজমান। এগুলো বোঝা মানুষের নিয়ন্ত্রণে নেয়।
কিন্তু তাঁর উপাসনা করে যে কেউ তাঁকে লাভ করতে পারেন। উপরন্তু এই ভক্তি সন্দেহ ও সংশয়হীন হওয়া উচিত এবং এর মধ্যে শুধু ভগবান শ্রীকৃষ্ণের প্রতি ভালোবাসা থাকা উচিত।
10) বিভূতি যোগ – গীতার মাহাত্ম্য
এই পৃথিবীতে যত ভাল-মন্দ গুণ আছে যেমন- জ্ঞান, সৌন্দর্য, শক্তি, ভয়, সাহস, হিংসা ইত্যাদি সবই শ্রীকৃষ্ণের সৃষ্টি।
যারা কৃষ্ণে বিশ্বাস করে তারা ভালো গুণাবলী অর্জন করেন। আর যারা তা করে না তারা খারাপ গুণাবলী অর্জন করেন।
ঈশ্বর তাদের উভয়কে তাদের কর্ম অনুসারে উপযুক্ত ফল বা শাস্তি প্রদান করেন।
11) বিশ্বরূপ দর্শন যোগ – Srimad Bhagavad Gita in Bengali
এই অধ্যায়ে শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে তাঁর বিরাট রূপ দেখান। অর্জুন দেখেন যে এই রূপ তিন জগত ব্যপী বিস্তৃত। সমগ্র বিশ্বে তাঁর প্রতিচ্ছবি রয়েছে।
তাঁর চারটি হাত। আর আছে অসংখ্য মাথা। কিছু মাথা নিখুঁতভাবে ভীতিকর এবং কিছু সৌম্য দর্শন। কোন কোন মুখ থেকে আগুন, জল ইত্যাদি বের হচ্ছে।
তাঁদের একদিক থেকে জন্ম নিয়ে পৃথিবীর দিকে আসছে বিভিন্ন প্রাণীরা। আর অন্যদিকে মৃত্যুর গালে ঢলে পড়ছে তারা।
জন্ম মৃত্যু সবই শ্রীকৃষ্ণের মাধ্যমে।
এই সব দেখে অর্জুন বিস্মিত হন এবং প্রভুর চরণে শ্রদ্ধার সাথে মাথা নত করেন।
12) ভক্তিযোগ – গীতার সারাংশ
শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন সবচেয়ে বড় যোগ হল ভক্তিযোগ। কেউ যদি বড় বড় বেদ-পুরাণ পড়তে না পারে; যজ্ঞ, হবন, তপস্যা করতে না পারে; তবে তার উচিত ভক্তিযোগের আশ্রয় নেওয়া।
মানুষের ঈশ্বরের প্রেমে মগ্ন হয়ে তাঁর ভক্তি করা উচিত। তাঁর স্তব গাওয়া উচিত। তাঁর মনন, চিন্তন, ধ্যান এবং প্রশংসা করা উচিত। নিজেকে সম্পূর্ণরূপে শ্রীকৃষ্ণের চরণে সমর্পণ করা উচিত।
এমন ভক্তদের শ্রীকৃষ্ণের খুব ভালবাসেন এবং তিনি নিজেই তাদের ভক্ত হয়ে যান।
এমনই প্রকৃত ভক্ত ছিল মীরা ও সুরদাস। ভগবান এমন ভক্তদের মোক্ষ দান করেন।
13) প্রকৃতি পুরুষ বিবেক যোগ – গীতা পাঠ বাংলা অনুবাদ
যে মানব দেহ, আত্মা, পরমাত্মা ও জ্ঞানের এই রহস্য বোঝে, সেই এই জগতের বন্ধন থেকে মুক্তি লাভ করে।
আত্মার মধ্যেই ঈশ্বরের বাস। কারণ তিনি আত্মার অংশ। কিন্তু অজ্ঞতার কারণে মানুষ তা বুঝতে পারে না। তাই আগে জ্ঞান অর্জন করতে হবে।
জ্ঞানের উদ্দেশ্য হল ঈশ্বরকে বোঝা। তবে এর জন্য মানুষকে সদাচারী হতে হবে।
অন্যথায় মানুষ অহংকারী হবে। তখন সে এই রহস্য বুঝতে পারবে না। আর সে নিজের মধ্যে ঈশ্বরকেও খুঁজে পাবে না।
14) গুণত্রয় বিভাগ যোগ – Bhagavad Gita Summary in Bengali
এই অধ্যায়ে শ্রীকৃষ্ণ তিনটি গুণের কথা বলেছেন। এই তিনটি গুণ – সাত্ত্বিক, তামসিক এবং রাজসিক।
সাত্ত্বিক লোকেরা নিরামিষ আহার করে, সাধারণ পোশাক পরে, কথায় নরম হয় এবং ভগবানের ভক্তি করে। তারা মৃত্যুর পর মোক্ষ লাভ করেন।
তামসিক প্রবৃত্তির লোকেরা আমিষ খাবার খান, নোংরা পোশাক পরে, হিংস্র হয় এবং কখনো ঈশ্বরের উপর ভক্তি দেখায় না। মৃত্যুর পর তারা নরক ভোগ করেন।
রাজস্বিক লোকেরা ভোগ ও বিলাসের প্রতি আগ্রহ দেখায়, তাদের মধ্যে উভয়ের গুণ থাকে। মৃত্যুর পর তারা তাদের কর্ম অনুসারে স্বর্গ ও নরক উভয়ই পেতে পারেন।
15) পুরুষোত্তম যোগ (Srimad Bhagavad Gita in Bengali)
বেদের সমস্ত জ্ঞানের সারমর্ম এই যে মানুষকে মোহো মায়া ত্যাগ করে ঈশ্বরের চরণে সমর্পণ করতে হবে। এটাই সবচেয়ে বড় যোগ।
মোহের কারণে মানুষ ভগবানকে লাভ করতে পারেন না। কারণ তার মন অর্থ এবং অন্যান্য বস্তুগত জিনিসকে ভালবাসতে শুরু করে। এটি তাকে ঈশ্বর উপলব্ধির পথ থেকে দূরে সরিয়ে রাখে।
সর্বোত্তম মানুষ সেই যে আসক্তি ত্যাগ করে নিজেকে ঈশ্বরের ভক্তিতে উৎসর্গ করেন।
16) দৈবসুর সম্পদ বিভাগ যোগ – গীতার সারাংশ
মানুষের মধ্যে দুই ধরনের প্রবৃত্তি পাওয়া যায়: দেব ও দানব।
দেব মনোভাব যাদের আছে তাদের অনেক ভালো গুণ থাকে। যেমন – সেবা, সংযম, সত্যবাদিতা, সততা, পরিচ্ছন্নতা, শান্তি ইত্যাদি।
তারা মোক্ষ লাভের যোগ্য।
বিপরীতে, আসুরিক প্রবৃত্তির লোকেদের মধ্যে খারাপ গুণ থাকে। যেমন – অহংকার, ঈর্ষা, ক্রোধ, কাম-বাসনা, লালসা, হিংসা ইত্যাদি।
তারা নরক লাভ করেন।
17) শ্রদ্ধত্রয় বিভাগ যোগ – Bhagavad Gita Saar in Bengali
অর্জুন জিজ্ঞাসা করলেন – বেদ ও পুরাণ ছাড়া যারা নিজ ইচ্ছায় ভক্তি করতে চায় তাদের কি করা উচিত?
শ্রী কৃষ্ণ বলেছেন – তাদের উচিত “ওম(ॐ) তত সত” অনুসরণ করা।
ওম মানে ঈশ্বর, তত মানে মোহো থেকে দূরে থাকা, সত মানে সত্য।
অর্থাৎ একজন মানুষের মোহো মায়া থেকে দূরে থেকে, সত্য পথে চলে ঈশ্বরের উপাসনা করা উচিত।
এমন মানুষকে ভগবান নিজের আশ্রয়ে নিয়ে পরিত্রাণ দান করেন।
18) মোক্ষযোগ – Srimad Bhagavad Gita in Bengali
এই অধ্যায়ে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে মোক্ষ লাভের পথ ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি বলেন যে, মোক্ষলাভের জন্য একজন মানুষকে সমস্ত জিনিসের প্রতি আসক্তি ত্যাগ করে সম্পূর্ণরূপে ঈশ্বরের কাছে আত্মসমর্পণ করতে হবে।
আমাদের জীবনের প্রতিটি কর্ম শুধুমাত্র শ্রীকৃষ্ণকে উৎসর্গ করা উচিত। তাঁর প্রতি অগাধ ভালবাসা রাখতে হবে। তাঁর প্রতি পূর্ণ আস্থা রাখা উচিত। তার পূজা করা উচিত এবং সন্ন্যাসীর মতো, সমস্ত বস্তু থেকে মোহো ত্যাগ করতে হবে।
এভাবে জীবন যাপন করলে মানুষ অবশ্যই মোক্ষ লাভ করবে।
শেষে শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে বলেন যে সে যদি এখনও যুদ্ধ করতে না চায় তবে সে চলে যেতে পারে। কিন্তু বিধির বিধান হবেই। তার পরিবর্তে অন্য কেউ যুদ্ধ করবে।
কিন্তু অর্জুনের সমস্ত সন্দেহের অবসান ঘটেছিল। তিনি ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে প্রণাম করেন এবং ধর্ম যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হন।
আমি এতক্ষণ যে সহজ এবং সরল বাংলা ভাষায় শ্রীমদ্ভগবদগীতার (Srimad Bhagavad Gita in Bengali) উপদেশ আপনাদের সামনে উপস্থাপন করলাম তার মূল ভিত্তি হল ‘শ্রীমদ্ভগবদগীতা যথাযথ‘।
আপনি ‘শ্রীমদ্ভগবদগীতা যথাযথ‘ বই টি Amazon এ পেয়ে যাবেন।
Price: ₹232.00 INR
Publisher : Bhaktivedanta Book Trust
Language: Bengali
Total Pages: 750
শ্রীমদ্ভাগবত গীতার প্রশ্ন উত্তর [FAQ]
হিন্দু ধর্মের মানুষরা গীতাকে কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ ক্ষেত্রে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের মুখনিঃসৃত বাণী বলে মনে করেন। শ্রীমদ্ভাগবত গীতায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন কি ভাবে জীবন যাপন করলে একজন মানুষ সকল প্রকার বন্ধন থেকে মুক্ত হয়ে মোক্ষ লাভ করতে পারবেন।
কৃষ্ণ দ্বৈপায়ন বেদব্যাস (ব্যাসদেব)
নিজের কর্ম করো ফলের চিন্তা কোরো না অর্থাৎ যে কর্ম করবে সে অবশ্যই তার ফল লাভ করবে।
মহাভারত
৭০০ টি
১৮ টি
শ্রীমদ্ভাগবত গীতার আঠারোটি অধ্যায়ের নাম হল বিষাদ যোগ, সাংখ্য যোগ, কর্মযোগ, জ্ঞানযোগ, কর্ম সন্ন্যাস যোগ, ধ্যান যোগ, বিজ্ঞান যোগ, অক্ষর ব্রহ্মযোগ, রাজগূহ্য যোগ, বিভূতি যোগ, বিশ্বরূপ দর্শন যোগ, ভক্তিযোগ, প্রকৃতি পুরুষ বিবেক যোগ, গুণত্রয় বিভাগ যোগ, পুরুষোত্তম যোগ, দৈবসুর সম্পদ বিভাগ যোগ, শ্রদ্ধত্রয় বিভাগ যোগ ও মোক্ষযোগ।
ভীষ্ম পর্বের অন্তর্গত
বিষাদ যোগ
গীতোপনিষদ
সূর্য দেবকে
গীতার জ্ঞান কে কোন স্থানে প্রদান করেছিলেন?
শ্রীকৃষ্ণ কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধক্ষেত্রে অর্জুনকে গীতার জ্ঞান প্রদান করেছিলেন।
বন্ধুগন, আশা করি শ্রীমদ ভগবদ গীতার অধ্যায়ভিত্তিক সারাংশটি পাঠ করে (Srimad Bhagavad Gita in Bengali) আপনার ভালো লেগেছে।
অনুগ্রহ করে বন্ধুদের সাথেও শেয়ার করে এই গীতা মাহাত্ম্য সবার কাছে পৌছে দিন।
ধন্যবাদ।
আরও পড়ুন: